প্রকাশিত: ২৮/০৪/২০২২ ১০:২৩ এএম

বাংলাদেশ থেকে আরো শান্তিরক্ষী নিয়োগ দিতে চায় জাতিসংঘ। নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠকে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা এ আগ্রহের কথা জানান। তারা বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের পেশাদারির উচ্চ প্রশংসা করেন।

নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন গতকাল বুধবার ভোরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ গত সোম ও মঙ্গলবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতিসংঘের সিকিউরিটি অ্যান্ড সেফটি বিভাগের আন্ডারসেক্রেটারি জেনারেল গিলেজ মিচাউদ, ভারপ্রাপ্ত মিলিটারি অ্যাডভাইজার মেজর জেনারেল মওরিন ও’ব্রায়ান, রাজনৈতিক ও শান্তি বিনির্মাণ বিভাগের সহকারী মহাসচিব (এএসজি) মোহাম্মদ খালেদ খিয়ারি, অপারেশনাল সাপোর্ট বিভাগের এএসজি ক্রিশ্চিয়ান স্যান্ডার্স ও পুলিশ অ্যাডভাইজার লুইস রিবেরিও ক্যারিলহোর সঙ্গে বৈঠক করেন।

সেনাপ্রধান বিশ্ব শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশের সাংবিধানিক অঙ্গীকারের কথা তুলে ধরেন। তিনি শান্তি রক্ষা মিশনগুলোতে নারী শান্তিরক্ষীসহ আরো বেশি বাংলাদেশি নিয়োগ, শান্তি রক্ষা কার্যক্রমে নেতৃত্বের উচ্চ পর্যায়ে বাংলাদেশ থেকে নিয়োগ, অন্যান্য শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশের সঙ্গে যৌথভাবে মিশনে অংশগ্রহণ এবং বাংলাদেশ থেকে ‘আর্মড পারসোনেল ক্যারিয়ার’ মোতায়েনের আহ্বান জানান।

সেনাপ্রধান গার্ড ইউনিটসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক মিশনে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের নিয়োগ, জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সিকিউরিটি অ্যান্ড সেফটি এবং অপারেশনাল সাপোর্ট বিভাগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের নিয়োগ, বাংলাদেশ থেকে আরো বেশিসংখ্যক পুলিশ কন্টিনজেন্ট ও ইনডিভিজ্যুয়াল পুলিশ অফিসার (আইপিও) নিয়োগের আহ্বান জানান।

ভারপ্রাপ্ত মিলিটারি অ্যাডভাইজর মেজর জেনারেল মওরিন ও’ব্রায়ান বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের পেশাদারি, নৈতিকতা ও নিয়মানুবর্তিতার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, এসব কারণেই বিশ্ব শান্তি রক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। তিনি ভবিষ্যতে বাংলাদেশ থেকে আরো বেশিসংখ্যক শান্তিরক্ষী নিয়োগে আগ্রহের কথা জানান।

ভারপ্রাপ্ত মিলিটারি অ্যাডভাইজর এবং রাজনৈতিক ও শান্তি বিনির্মাণবিষয়ক বিভাগের এএসজি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে একটি এভিয়েশন কন্টিনজেন্ট জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে যত দ্রুত সম্ভব মোতায়েনের অনুরোধ জানান। সেনাপ্রধান এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ এ ব্যাপারে নীতিগত সম্মতি জানান। সেনাপ্রধান শান্তি রক্ষা মিশনের বাংলাদেশি কন্টিনজেন্টগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত অস্ত্র ও সরঞ্জাম পরিবর্তন করে বাংলাদেশ থেকে নতুন অস্ত্র ও সরঞ্জাম প্রতিস্থাপন করার প্রস্তাব দেন। জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে সম্মতি জানান। এটি বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের সক্ষমতা, সুরক্ষা ও মনোবল বৃদ্ধিতে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশন।

সহকারী মহাসচিব ক্রিশ্চিয়ান স্যান্ডার্স বিভিন্ন মিশনে বাংলাদেশি হেলিকপ্টার কন্টিনজেন্ট নিয়োগসহ অন্যান্য শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের সহায়তা প্রত্যাশা করেন। পুলিশ অ্যাডভাইজর লুইস রিবেরিও ক্যারিলহো আরো বেশি বাংলাদেশি পুলিশ সদস্য নিয়োগের আগ্রহের কথা জানান। জাতিসংঘের রাজনৈতিক ও শান্তি বিনির্মাণবিষয়ক বিভাগের সহকারী মহাসচিব খালেদ খিয়ারি স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণ এবং বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মানবিক আশ্রয়দানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের প্রশংসা করেন।

সেনাপ্রধান জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে স্থাপিত বেঞ্চ ও রোপণ করা বৃক্ষ ‘হানি লুকাস্ট’ পরিদর্শন করেন।

পাঠকের মতামত

ইসকন নিষিদ্ধ হবে কি-না সেই সিদ্ধান্ত নেবে সরকার: হাইকোর্ট

আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবামৃত সংঘ- ইসকনের বিষয়ে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী। ...